অধ্যাপক মোহাম্মদ হাশেমের ৭৫তম জন্মজয়ন্তী ১০ জানুয়ারি। দিবসটি উদযাপনে নোয়াখালী জেলা শিল্পকলা একাডেমির বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চে ‘হাশেম উৎসব’ আয়োজন করা হয়েছে।
নোয়াখালীর আঞ্চলিক গানের জনক হিসেবে পরিচিত অধ্যাপক মোহাম্মদ হাশেমের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে দুই বিশিষ্ট নাগরিককে মোহাম্মদ হাশেম পদক দেয়া হবে।
ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মুস্তফা মনওয়ার হাশেম সুজন বুধবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘শিল্পী মোহাম্মদ হাশেমের জন্মোৎসব এবার উন্মুক্ত পরিবেশে উদযাপন করা হবে। উৎসব ঘিরে বসবে শিল্পী, সাহিত্যিক, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিসহ গণমানুষের মিলনমেলা। দিনব্যাপী চলবে সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা কার্যক্রম।’
এবার দুই বিশিষ্ট নাগরিককে মোহাম্মদ হাশেম পদক প্রদান করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মোহাম্মদ হাশেম পদক-২০২২ পাচ্ছেন দেশবরেণ্য গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক হাসান মতিউর রহমান এবং বাংলাদেশ বেতারের সাবেক মহাপরিচালক ও ছায়ানটের শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র শীল। এ ছাড়াও শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিসহ জনকল্যাণে বিশেষ অবদানের জন্য ফাউন্ডেশনের জুরি বোর্ড মনোনীত ১২ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হবে।’
অধ্যাপক মোহাম্মদ হাশেমের ৭৫তম জন্মজয়ন্তী ১০ জানুয়ারি। দিবসটি উদযাপনে নোয়াখালী জেলা শিল্পকলা একাডেমির বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চে ‘হাশেম উৎসব’ আয়োজন করা হয়েছে।
সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চে হাশেম উৎসব উদ্বোধন করেন নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান। সকাল ১০টায় শুরু হয় মোহাম্মদ হাশেমের গানের প্রতিযোগিতা। দুপুর দেড়টায় শিল্পীর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়া শেষ হয়; দুপুর ২টায় হবে শোভাযাত্রা।
বেলা ৩টায় বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চে ‘গণমানুষের শিল্পী মোহাম্মদ হাশেম’ শিরোনামে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করবেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মানছুরুল হক খসরু।
বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান শেষে দেশবরেণ্য দুই গুণিজনের হাতে তুলে দেয়া হবে ‘মোহাম্মদ হাশেম পদক-২০২২’। বিকাল ৫টায় একই মঞ্চে শুরু হবে সংগীতানুষ্ঠান। এতে সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করবেন স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীরা।
রাত সাড়ে ৮টায় হাশেমের সৃষ্টি ও বর্ণাঢ্য জীবনের ওপর সাজ্জাদ রাহমান ও সানজিদা সুলতানা নির্মিত আলাদা দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্য তথ্যচিত্র প্রদর্শনীর পরপরই সংগীত প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হবে।
নোয়াখালীর প্রধান সংগীত খ্যাত ‘আঙ্গো বাড়ি নোয়াখালী রয়্যাল ডিস্ট্রিক ভাই/হেনী মাইজদী চৌমুহনীর নাম কে হুনে নাই’সহ হাজারো গানের গীতিকার ও সুরকার মোহাম্মদ হাশেমের জন্ম নোয়াখালী সদরের চরমটুয়া ইউনিয়নের শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামে।
বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের বিশেষ শ্রেণির গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী মোহাম্মদ হাশেম ৪০ বছরের বেশি সময় নোয়াখালীর আঞ্চলিক গান নিয়ে গবেষণা করছেন; লিখেছেন অন্তত দুই হাজার গান। লোকমুখে তিনি নোয়াখালীর আঞ্চলিক গানের সম্রাট, জনক, কিংবদন্তি।
২০০৫ সালে অমর একুশে বইমেলায় বের হয় এই সাধক পুরুষের গানের প্রথম সংকলন ‘নোয়াখালীর আঞ্চলিক গান’। ২০১৫ সালে মোহাম্মদ হাশেমের রচিত বাছাই করা ২৫০টি গান নিয়ে উৎস প্রকাশন বের করে ‘নির্বাচিত নোয়াখালীর আঞ্চলিক গান’।